Bivash Bishnu Chowdhury
© Thespian Magazine. Published under Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International License, which permits non-commercial re-use, distribution, and reproduction.
---
সম্পাদকীয়
গ্রুপ থিয়েটারে কাজ করতে করতে – মাটির অভ্যন্তরস্থিত দুটো গাছের শেকড়ের জালের মত কখন, কীভাবে নাট্যের রক্ত, বর্ণ, গন্ধ ও নাড়ীর যোগসূত্র স্হাপিত হয়েছে এটা বুঝতে বুঝতেই অনেকটা সময় অতিক্রান্ত। নাট্যশিল্পের এক চরম স্হিতাবস্হা হতে উত্তরণের এই শুভলগ্নে এই প্রকাশনা ভাবনাটি বাংলা তথা সমগ্র বিশ্বের সকল নাট্যজনদের সাথে হাতে হাত রেখে নাট্য ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতাকে সুবিস্তর প্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার একটি ক্ষুদ্র উদ্যোগ মাত্র। ভারতবর্ষে এমন এক সময় এসেছিল যখন স্ত্রীজাতি ও শুদ্র জাতি বেদের পঠন ও পাঠন থেকে বঞ্চিত হয়েছিল। এখানে বেদ পাঠের প্রয়োজনীয়তার চাইতেও প্রকট হয়ে দেখা দেয় মানুষ কর্তৃক মানুষের ‘স্বাধিকার হরণ’। যাহোক্, এমতাবস্হায় ব্রহ্মা তখন জাতিধর্ম নির্বিশেষে লোকশিক্ষা এবং লোকের বিনোদনের নিমিত্ত সৃষ্টি করলেন নাট্যরূপ ‘পঞ্চম বেদ’ (ভরত নাট্যশাস্ত্র)। পঞ্চম বেদের সৃষ্টিও যে জাতিভেদ বর্জিত হয়েছিল তা নয় কিন্তু এর ফলে যেটা হল – ‘বেদ’ আখ্যা দেওয়ায় একদিকে যেমন নাট্যের মর্যাদা বৃদ্ধি হ’ল অপরদিকে তেমনি নাট্যরচনা এবং নির্দেশনায় যে নাট্যকার এবং নির্দেশকের একটি সামাজিক ও নৈতিক দায়িত্ব আছে তাও বুঝিয়ে দেওয়া হ’ল। এই দায় যেমন আমাদের সকলের তেমনি রাষ্ট্রের। কারণ কাঠামোগত কারণেই হোক বা অন্য কোনো কারণে, আমরাতো রাষ্ট্রীয় সমাজ ব্যবস্হার দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ ছাড়া কোনো কিছুরই বিস্তর প্রকাশ আপাতদৃষ্টিতে সম্ভব নয়।
উত্তরসূরী সর্বদাই ঋণী তার পূর্বসূরীর কাছে এবং পূর্বসূরীর সৃষ্ট কর্মফলেই উত্তরসূরীর ভাগ্য নির্ধারিত; আর সেই সূত্রেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে বাঙ্গালীর ঋণের কোনো সীমা পরিসীমা নেই। কিছুটা হলেও বাঙ্গালী হিসেবে সেই ঋণের দায় শোধের ভাগীদার হওয়াটাও কম সৌভাগ্যের নয়। আর তাই ‘থেস্পিয়ান’ তার শুরুর মূহুর্তের প্রথম প্রকাশটি নিবেদন করতে চায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মরণে, বিনম্র শ্রদ্ধায়। নাট্যসামাজিকতায় পথ চলতে চলতে অনেক বারই শুনতে হয়েছে ‘থিয়েটার একটি মৃত শিল্পমাধ্যম’। কিন্তু তার ফলে তো সৃষ্টিশীলতা থেমে নেই, চলছে। আর এই চলার পথে যা কিছু ধুলোর আস্তরনে আবৃত, কাঙ্খিত অনাকাঙ্খিত এই সকল বিষয়ের যুক্তিপূর্ণ উপস্থাপনের লক্ষ্যেই এই প্রকাশনার শুরু।
প্রকাশনা ভাবনার শুরু থেকে প্রকাশের দিন পর্যন্ত এই দীর্ঘ সময়ে নানান মতের নানান পেশায় নিয়োজিত অনেক বন্ধু, শুভাকাঙ্খী প্রকাশনাটির সার্থক প্রকাশের জন্য নিশর্তভাবে যে অক্লান্ত শ্রম প্রদান করেছেন – এই স্বল্প পরিসরে তাদের সকলের ঋণ প্রকাশ করা হয়তো সম্ভব নয় কিন্তু ‘থেস্পিয়ান’ তার সকল পদক্ষেপে তাঁদের স্মরণ করবে সব সময়। তাঁদের সকলের চরণে আমাদের মস্তক। প্রকাশনার সর্বত্র অনবধানবশত কোনো ত্রুটি ঘটে থাকলে তা মার্জনীয়।
![]() |
Bivash Bishnu Chowdhury, MA in Performing Arts and working in group theatre based in Santiniketan. |
MLA Citation: